কাজলের সঙ্গে করণ জোহরের ২৫ বছরের বন্ধুত্বের সম্পর্ক
বলিউড
অভিনেত্রী কাজলের সঙ্গে পরিচালক ও প্রযোজক করণ জোহরের গভীর বন্ধুত্বের কথা বলিউডের
ভেতরে-বাইরে সবাই জানেন।
এ কারণে করণের প্রায় সব ছবিতেই কাজলের উপস্থিতি নজরে আসে। কিন্তু তাঁদের এই গাঢ় সম্পর্কে চিড় ধরা পড়েছে। করণের ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ ছবির সঙ্গে একই সময়ে অজয় দেবগানের ‘শিবায়’-এর মুক্তিকে কেন্দ্র করেই নাকি সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হয়, এমনটাই জানা যায় জুম টিভির এক প্রতিবেদন থেকে।
ছবি মুক্তির প্রশ্নে
বন্ধুর পাশে নয়, কাজল দাঁড়িয়েছেন স্বামী অজয়ের পাশে। আর এমন জায়গা থেকেই পরস্পরের
প্রতি তীক্ষ্ণ মন্তব্য ছুড়েছেন কাজল ও করণ। এ দ্বন্দ্বে শুধু কাজল নন, স্বয়ং অজয়ও
জড়িয়ে যান। এক সাক্ষাৎকারে অজয় বলেই বসেন, করণের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না কাজলের।
এমন গুজবও ছড়িয়ে পড়ে, সামাজিক মাধ্যমে অজয়ের ছবির বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য নাকি
অভিনেতা কমল আর খানকে টাকাও দিয়েছিলেন করণ।
এমনই এক পরিস্থিতিতে
প্রকাশ পেল করণের অপ্রকাশিত আত্মজীবনী ‘অ্যান আনসুটেবল বয়’ বইয়ের কিছু পাতা। এতে যেন আগুনে ঘি ঢালার মতোই কাজ হলো।
বইতে করণ অনেকটা খোলাখুলিভাবেই কাজলের সঙ্গে সম্পর্ক শীতল হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে কথা
বলেছেন। যদিও পুরোটা খোলাসা করেননি, কিন্তু ইঙ্গিত দিয়েছেন। কী আছে সেই বইতে? চলুন
দেখে নেওয়া যাক একঝলক করণ-কাজলের দ্বন্দ্ব।
বইতে করণ লিখেছেন, ‘কাজলের সঙ্গে আমার আর কোনো সম্পর্ক নেই। কিছু বিষয় আমাকে
অনেক বেশি কষ্ট দিয়েছে, যা আমি বলতে চাই না। কারণ, এগুলো আমি গোপন রাখতে চাই এবং
আমি মনে করি, এটা প্রকাশ করা তাঁর ও আমার, কারো জন্যই ভালো হবে না। প্রায় ২৫ বছর
পর আমি আর কাজল কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা একে অন্যের সঙ্গে দেখা হলে শুধু হ্যালো
বলি, এর পর হেঁটে চলে যাই। আসলে আমার আর কাজলের মধ্যে কোনো সমস্যা ছিল না।’
করণ যোগ করেন, ‘এটা কাজলের স্বামী অজয় আর আমার সমস্যা। কিছু বিষয় কাজল
জানে, কিছু আমি আর কিছু তাঁর স্বামী অজয়। আমি এ বিষয়ে কিছুই বলতে চাই না। কিন্তু
আমার মনে হয়, কাজলের এমন কিছুর জন্য ক্ষমা চাইতে হয়েছে, যা ও করেনি। আমি মনে করি,
কাজলের আমাদের ২৫ বছরের বন্ধুত্বের কথা মনে রাখা উচিত। সে যদি তাঁর স্বামীর পক্ষে
থাকে, তাহলে সেটা তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। এ বিষয়টিও আমি বুঝি। কিন্তু আমি এখন
আর কাজলের জীবনে থাকতে চাই না। কয়েক মাস হয়ে গেছে, আমরা একে অন্যের সঙ্গে কথাও বলি
না।’
অজয়ের বিরুদ্ধে বলার জন্য
অর্থ ব্যয়ের বিষয়টিও উঠে এসেছে করণের বইতে। করণ বলেন, “অজয়ের সিনেমা ‘শিবায়’
আর আমার সিনেমা ‘অ্যায় দিল
হ্যায় মুশকিল’ একই সময়ে
মুক্তি পায়। তখন অজয় অভিযোগ করে, আমি নাকি কাউকে ঘুষ দিয়েছি তাঁর সিনেমা নিয়ে বাজে
মন্তব্য করতে! এই কথা শুনে আমি কতটা কষ্ট পেয়েছি বা খারাপ লেগেছে, কিছুই তখন
বলিনি। আমি এটা ভুলে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যখন কাজল পুরো বিষয়টি জেনে ‘শকড’
বলে টুইট করে, তখন আমার খুবই খারাপ লাগে। এই টুইটের মানে হচ্ছে, সে বিশ্বাস করেছে,
আমি কাউকে সত্যি ঘুষ দিয়েছি। তখন আমি ভাবলাম আর না, এটা এখানেই শেষ করা উচিত। এবং
সে কখনোই আমার জীবনে আর ফিরে আসতে পারবে না। আমিও মনে করি, সেও হয়তো আমার মতো
ভাবছে। তাঁদের সঙ্গে আমি আর কোনো কাজ করতে চাই না।বন্ধুর উদ্দেশে করণ বলেন, ‘কাজল আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কিন্তু এখন আর
নেই। আমি আমার মাকে বলেছি, সে যদি কাজলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চায়, তাহলে একাই
রাখতে হবে। এটা আমার মায়ের বিষয় আর কাজলের। তবে আমার জীবনে কাজল আর নেই। আমি আমার
জীবনে তাঁকে আর জায়গা দিতে চাই না, কারণ সে আমার আবেগ অনেক বাজেভাবে নষ্ট করেছে,
যেটা গত ২৫ বছর ছিল। আমি মনে করি, সে আমার যোগ্য নয়। আমি এখন তাঁর জন্য কিছুই
অনুভব করি না। আমি আমার বন্ধুদের বলেছি, এখনো আমার মন চায় ওর সঙ্গে কথা বলতে;
কিন্তু পরিস্থিতির কারণে আমি একবারে বদলে গিয়েছি। কাজলের টুইটে আমি কষ্ট পেয়েছি।
এখন যা কিছুই ঘটুক না কেন, আমি কিছুই বলব না। তাঁরও এতে কিছু হবে না। আমি তাঁর
স্বামীকে নিয়েও কিছু বলতে চাই না। কারণ, কাজল আর আমার সম্পর্ককে আমি সম্মান করি।
তবে হ্যাঁ, এটা আমার কাছে খারাপ লাগে যে কাজল তাঁদের সঙ্গে এখনো ঘনিষ্ঠ, যাদের
সঙ্গে আমারও ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। এঁরা হলেন মানিশ ও নিরঞ্জন। এটা না হলেই মনে হয় ভালো
হতো। যখন তাঁরা কাজল সম্বন্ধে কিছু বলে, তখন আমার খুব রাগ লাগে। আমি জানি, আমার
মতো তাঁরাও একইভাবে চিন্তা করবে, এটা ভাবা ভুল। কিন্তু বিষয়টা এখন আমার কাছে বোঝার
মতো। আমিও মানুষ। নিজের প্রতি আমি অসৎ হতে পারব না।’
বইতে করণ আদৌ এসব লিখেছেন
কি না, সেটা স্বতন্ত্রভাবে পরীক্ষা করা যায়নি। তবে যদি সত্যি হয় তাহলে বোঝা
যাচ্ছে, কাজল ও করণের সম্পর্কে সত্যিই ফাটল ধরেছে।